আমরা না খুবই বোকা,
সারাজীবন ধরে শুধু পারফেক্ট কাউকেই খুঁজতে থাকি।
খুঁজতে খুঁজতে আমাদের পাশের, খুব কাছের মানুষ গুলোর দিকে কখনো আর নজর দেওয়া হয় না।
পাশের মানুষটার আমাদের জন্য চিন্তা, তার কেয়ার, তার ভালোবাসা কোনো কিছুই খেয়াল করি না আমরা।
আমরা রূপকথার রঙিন গল্পে ডুবে থাকি, আর ভাবি কোনো এক রাজকন্যা তার সোনার কাঠি নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হবে।
আমরা কল্পনায় কলেজের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটি, সিনেমার জিরো ফিগারের নায়িকাটিকে নিজের পাশে দেখতে চাই।
অথচ আমাদের পাশের মানুষটির গুরুত্ব বেমালুম ভুলে যাই।
হতে পারে, সে আমাদের কলেজের ক্রাশের মত অতটা হট নয়, তার গায়ের রং অতটা দুধে আলতা ফর্সা নয়, হালকা শ্যাম বর্ণের;
সে সিনেমার হিরোইনের মত জিরো ফিগারের নয়, হালকা মেদ আছে তার শরীরে।
কিন্তু সেই মানুষটাই প্রতিদিন আমাদের খেয়াল রাখে, আমাদের সুখে সুখী হয়, দুঃখে পাশে বসে সাহারা দেয়।
আমরা কি খেলাম, না খেলাম তার খবর রাখে।
মানুষটা তার ঘর থেকে লুকিয়ে মিথ্যা কথা বলে আমাদের সাথে দেখা করতে আসে,
আমাদের কথা ভাবতে গিয়ে ক্লাসে অন্যমনস্ক হয়ে,
ক্লাস টিচারের কাছে পড়া দিতে না পেরে বকুনি খায়, ক্লাস শুদ্ধু সবার সামনে অপমানিত হয়, শুধু সারা রাত আমাদের সাথে জেগে ফোনে কথা বলেছে বলে।
নিজের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা সব খুব সহজে লুকিয়ে যায় পাছে আমাদের খারাপ লাগবে বলে।
কথায় কথায় আমাদের সাথে অ্যাডজাস্ট করে,
মাঝে মাঝে আমাদের তাকে করা তীব্র অপমান, রাগ সব সহ্য করে নেয়, এই ভেবে যে পরক্ষণে মাথা ঠাণ্ডা হলে আমরা তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব, তার অভিমান ভাঙিয়ে তাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেব।
কিন্তু সে অভিমান আর ভাঙ্গে না,
কারণ আমরা যে সে অভিমানের কোনো খবরই রাখি না।
অবশেষে অভিমান জমতে জমতে যখন সম্পর্কে ফাটল ধরে, দূরত্বটা ক্রমশ বাড়ে;
যখন আর ফেরার কোনো রাস্তা থাকে না;
তখন আমরা বুঝতে পারি —
আসলে পারফেক্ট বলে কিছু হয় না,
কেউ পারফেক্ট হয় না।
অথচ এই পারফেক্ট এর খোঁজে, আমরা হারিয়ে ফেলি সেই মানুষটাকে,
যে আমাদের চোখে, সমাজের চোখে পারফেক্ট না হলেও,
আমাদের জন্য সবচাইতে পারফেক্ট ছিল।
সত্যি, আমরা না খুবই বোকা।