এই যে আমরা কথায় কথায় বলি, আমাদের সম্পর্কে তৃতীয় ব্যাক্তির প্রবেশের জন্য সম্পর্কটা পুরো নষ্ট হয়ে গেল, সেই তৃতীয় ব্যাক্তি যে কেউ হতে পারে – পার্টনারের বেস্ট ফ্রেন্ড বা অন্য নতুন কেউ।
কিন্তু আমার প্রশ্ন হল – সত্যিই কি সম্পর্কটা তৃতীয় ব্যক্তির জন্য নষ্ট হয়ে গেল নাকি সম্পর্কটা আগে থেকেই নষ্ট হয়েছিল ?
আমার মনে হয়, তৃতীয় ব্যাক্তিটি শুধু অনুঘটকের কাজ করেছে মাত্র।
নইলে একটিবার ভেবে দেখ – প্রভু শ্রীরাম ও মাতা সীতার জীবনেও তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে রাবণের প্রবেশ ঘটেছিল। মাতা সীতাকে লঙ্কায় হরণ করে অশোক বাটিকায় রাখার পরে রাবণ কত না চেষ্টা করেছিল মাতা সীতাকে পাওয়ার জন্য ।
কখনও অর্থ, রূপ, কখনও ভয় দেখিয়ে; অর্থাৎ সাম – দাম – দণ্ড – ভেদ সবকিছু কাজে লাগিয়েও মাতা সীতার মন থেকে প্রভু শ্রীরাম কে কখনও টলাতে পারেনি।
এতটাই বিশ্বাস ও ভালোবাসা ছিল উনাদের সম্পর্কে।
তাহলে এবার বল !!!
তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে রাবণ কি পেরেছিল প্রভু শ্রীরাম ও মাতা সীতার সম্পর্ক নষ্ট করতে ??
পারেনি।
কারণ তাদের মন, আত্মা পুরোপুরি ভাবে একে অপরকে সমপির্ত ছিল।
আর আজকালকার যুগে তোমরা বল কিনা, তৃতীয় ব্যক্তি এসে তোমাদের সম্পর্ক নষ্ট করে দিয়েছে।
যদি নিজেদের মধ্যেই কোনো ঘোট না থাকে, তবে কোনো তৃতীয় ব্যাক্তি এসে কোনো সম্পর্ককেই কখনোই নষ্ট করতে পারে না।
আসলে সমস্যা তোমাদের। তোমরা হুটহাট করে প্রেমে পড়, অর্ধেকের বেশি জন তো ভালোবাসার মানেই বোঝে না। কোনটা অ্যাটাচমেন্ট আর কোনটা ভালোবাসা সেটাই ঠিক করে বুঝতে পারে না।
কিছুদিন সম্পর্কে থাকার পর যখন অ্যাটাচমেন্ট টা হারিয়ে যায়, তখন বেটার অপশন খুঁজতে থাকে। আর ঠিক সেই সময় তৃতীয় ব্যাক্তির প্রবেশ ঘটে ঠিক ধূর্ত শেয়ালের ঝোপ বুঝে কোপ মারার মত।
তারপর ধীরে ধীরে সম্পর্কটা টক্সিক সম্পর্কে পরিণত হয়; যেহেতু মন থেকেই আগে সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গেছিল। শুধুমাত্র সম্পর্ক থেকে বেরোনোর জন্য একটা অজুহাতের দরকার ছিল। আর সেই অজুহাতটা হয়ে দাঁড়ায় ঐ তৃতীয় ব্যাক্তি, ঠিক যত দোষ নন্দ ঘোষের মত।
তাই এসব তৃতীয় ব্যাক্তির কথা বাদ দিয়ে আগে দেখ নিজেদের মধ্যে কি সমস্যা আছে।
নিজেদের মধ্যে সমস্ত সমস্যা, বোঝা পড়া, ট্রাস্ট ইস্যু এগুলো সব সমাধান করে নিতে পারলে, কোনো তৃতীয় ব্যাক্তির ক্ষমতা নেই তোমাদের সম্পর্কে আগুন লাগাতে।
তাই এসব বাইরের বাধা বিপত্তির দিকে চোখ না দিয়ে নিজেদের ইস্যু ও তার সমাধানেই নিজেদের কে সীমাবদ্ধ রাখ। আর নিজেদের বিশ্বাস, সম্মান ও ভালোবাসাকে মজবুত কর।
দেখবে সব সম্পর্কই স্থায়ী ও টেকসই হবে।