সব কিছুই তো ঠিকঠাক চলছিল। আমি ছিলাম আমার জগৎ এ নিঃসঙ্গতা আর আমার লেখালেখি কে নিয়ে।
তারপর হঠাৎ করে কোথা থেকে তুমি যেন উড়ে এসে জুড়ে বসলে আমার জীবনে।
হঠাৎ করে তুমি আমার লেখার প্রেমে পড়লে। আমার জীবনে এই প্রথম বার তুমি আমায় প্রিয় লেখক বলে ডাকলে। জীবনে প্রথমবার কেউ আমায় বলল যে, সে আমার লেখার খুব বড় ভক্ত।
সেদিন আমার খুশির সীমানা ছিল না। আমার লেখার প্রথম ফ্যান বলে কথা, হয়তো আমার একমাত্র ফ্যান।
তারপর দিন দিন আমাদের কথা চলতে থাকল। কখনও কমেন্ট বক্সে একের পর এক কথার ঝুরি ঝরতে থাকল। যেখানে মাত্র চারজনের চারটি কমেন্ট হবার কথা, সেখানে তোমার আমার কথায় বাড়তে বাড়তে একশোর কাছাকাছি কমেন্ট বক্সে ভরে গেল।
এভাবেই ধীরে ধীরে কমেন্ট বক্স থেকে আমার কথা এগোল ম্যাসেঞ্জার বক্সে। সেদিন হঠাৎ করে তুমি আমার নাম্বার চাইলে, আমার ফেসবুক থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আসতে চাইলে। আমিও সানন্দে তোমার আবদারে সিলমোহর দিলাম।
এভাবেই তো এগোচ্ছিল আমাদের বন্ধুত্ব। কিন্তু হঠাৎ করে আমার সাথে এটা কি ঘটলো! তোমার প্রতি এতটা মায়ায় কেন জড়িয়ে পড়লাম হঠাৎ !
প্রতিদিন বারবার তোমার প্রোফাইল চেক করতে মন চায়। চেষ্টা করেও সামলাতে পারি না নিজেকে তোমার প্রতিটা ফটো বারবার জুম করে দেখতে।
তোমার প্রত্যেকটা পোস্টের সাথে নিজেকে গুলিয়ে ফেলি। নিজেকে নিয়ে নিজের মনে ভাবি, তোমার এই পোস্ট টা বোধ হয় শুধু আমার জন্য, আমায় উদ্দেশ্য করে। এমনটা কেন হচ্ছে আমার সাথে!
তোমায় অন্য কারোর সাথে ছবিতে দেখলে, তোমার ব্যক্তিগত পোস্ট, কমেন্ট দেখলে, বার বার মন চায় তোমায় জিজ্ঞাসা করতে। কিন্তু সে তো আমার এক্তিয়ারের বাইরে। তাই সেই কৌতুহল ভরা প্রশ্নের পুরোটা লিখেও আবার মুছে ফেলি, আমার সেই উৎসুকতা হৃদয়ে চাপা পড়ে থাকে, তোমার কাছে আর পৌঁছোয় না। এভাবে তোমার প্রতি এই একতরফা অ্যাটাচমেন্টে কেন জড়িয়ে পড়ছি আমি !
আমার এই ইমাজিনারি দুনিয়ার সৃজক ও আমি, আর তোমার আমার চরিত্রে ও সেই আমি; যেখানে বাস্তব তোমার কোনো অস্তিত্বই নেই।
এবার যখন তোমার যাবার সময় হল, তখন নিজেকে এই তোমার নেশা থেকে কেমন করে সামলাই?
না পারছি তোমায় কিছু বলতে, না পারছি তোমার মায়া কাটাতে। বারবার আমি কেন এভাবে একতরফা মায়ায় জড়িয়ে পড়ি !
বার বার আমিই কেন তীব্র দুশ্চিন্তা আর মাইগ্রেন নিয়ে ছটফট করি!
আবার যে আমাকে সেই ছোট ছোট মন খারাপ, একাকী নিঃসঙ্গতা অনুভবের মধ্য দিয়ে সেই ভয়ংকর মুভঅন প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যাত্রা করতে হবে।
বার বার আমার সাথেই কেন হয় এমনটা?